• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:০০ অপরাহ্ন
Headline
অনিয়মকে নিয়ম মেনেই চলছে গুইমারা বাজার অবৈধ গ্যাস পুনরায় সংযোগ দিলে চাকরি থাকবে না : পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান গাছায় কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা -২০২৪ অনুষ্ঠিত। গাজীপুরে বনে জবরদখল উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন গাজীপুরে বেনজির কর্তৃক বনভূমি জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন গাজীপুর কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত অক্সফোর্ড প্রিপারেটরি স্কুল এন্ড কলেজর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত এম এ বারী ক্যাডেট একাডেমির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত কলমেশ্বর প্রতিভা মডেল স্কুল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত কেয়ার এডুকেশনস গাজীপুর ও এম এ বারি শিক্ষা পরিবারের যৌথ আয়োজনে গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হলো গণিত উৎসব ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ২০২৪

গাজীপুরে রেলে নাশকতা যুবদল সভাপতির পরিকল্পনায়: পুলিশ

রিপোর্টারের নাম / ১১২ টাইম:
আপডেট: সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

হাজী মুছা :
গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলছেন, বিএনপির হরতাল-অবরোধের মধ্যে ওই নাশকতার ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা’ হলেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বর্তমান যুবদল নেতা ইখতিয়ার রহমান কবির এবং ঢাকার লালবাগ থানার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদল সভাপতি ইমন হোসেন। গত রোববার ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তারের করারে কথা জানিয়েছে সিটিটিসি। তাদের কাছ থেকে কিছু যন্ত্রপাতি উদ্ধারের কথাও পুলিশ বলছে, যেগুলো আজ সোমবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেখানো হয়। রেলে নাশকতা ছাড়াও ঢাকায় অন্তত আটটি বাসে নাশকতার সঙ্গে ইখতিয়ার রহমান কবির যুক্ত বলে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামানের ভাষ্য। গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের ভাওয়াল স্টেশনের অদূরে বনখড়িয়া এলাকায় জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেললাইন কেটে ফেলা হয়। তাতে দুর্ঘটনায় পড়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হলে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। ওই ঘটনায় গত ১৭ ডিসেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাবেক বিএনপি নেতা হাসান আজমল ভূঁইয়াসহ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের সাত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। তখন গাজীপুরের পুলিশ জানিয়েছিল, আজমল ভুঁইয়াই ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা’। নাশকতার সমন্বয়কারী হিসেবে গাজীপুরের পুলিশ ছাত্রদল নেতা ত্বোহা ও মাসুমের যুক্ত থাকার কথা জানিয়েছিল। ঢাকার পুলিশও তাদের দুজনের সম্পৃক্ততার কথা বলেছে, তবে তারা এখনো গ্রেপ্তার হননি। গতকাল সোমবার মিন্টো রোডের সংবাদ সম্মেলনে সিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপির ডাকা কয়েক দফা হরতাল ও অবরোধে দূরপাল্লার বাস চলাচল কমে গেলেও রেলে কোনো প্রভাব পড়েনি। এ কারণে ‘ব্যাপক আতঙ্ক তৈরির জন্য’ যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু রেললাইনে ‘নাশকতা ও ব্যাপক প্রাণহানি ঘটানোর’ পরিকল্পনা করেন। “তিনি সাবেক ছাত্রদল নেতা ইখতিয়ার রহমান কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, দলীয় উচ্চ পর্যায় থেকে বড় কিছু করার চাপ রয়েছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইখতিয়ার গাজীপুরের আজিমউদ্দীন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ত্বোহা ও গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুমেরর সাথে যোগাযোগ করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ত্বোহা এবং মাসুম গাজীপুরের কাউন্সিলর আজমল ভুঁইয়ার বাসায় মিটিং করে। “তাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল রেললাইনের নাট-বল্টু খুলে রেল চলাচল বাধাগ্রস্ত করা। কিন্তু কয়েকবারের চেষ্টায় তারা সেটা করতে না পেরে ত্বোহা ও মাসুম আবারও ইখতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবার ইখতিয়ার বলে দেন, রেললাইন কেটে ফেলতে হবে, কাটার লোকও তিনি দিয়ে দেবেন।” সিটিটিসি প্রধান বলেন, রেললাইন কাটার জন্য তখন ইমন হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইখতিয়ার রহমান। কিন্তু তারা কেউ লোহার পাত কাটার কৌশল জানতেন না। সেটা শেখার জন্য ইমনকে টাকা দেন ইখতিয়ার। ইমন ২-৩ দিন সময় নিয়ে লোহার পাত কীভাবে কাটতে হয় সে বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নেন। আসাদুজ্জামান বলেন, পরিকল্পনা অনুসারে ত্বোহা ও মাসুম গাজীপুর থেকে গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন। আর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার নবাবপুর মার্কেট থেকে বাকি সরঞ্জাম সংগ্রহ করে ইমনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ত্বোহা ও মাসুম ঢাকায় এসে ইমন হোসেনের কাছ থেকে নাশকতার জন্য কেনা যন্ত্রপাতিগুলো নিয়ে যান। ওই সন্ধ্যায় ইখতিয়ার রহমান ও ইমন হোসেন কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে জয়দেবপুরে পৌঁছান। সেখানে আগে থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষমাণ ত্বোহা ও মাসুম তাদের দুজনকে স্টেশনের বাইরে থেকে তুলে নেন। পরে তারা বেশ কয়েকজনকে গাড়িতে তোলেন। রাতে তারা শিমুলতলির হান্ডি রেস্তোঁরায় খাবার খান। তারা মোট নয় জন ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারা ঘটনাস্থল থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে সিলিন্ডারসহ যাবতীয় সরঞ্জাম ঘটনাস্থলে রেল লাইনের পাশে নিয়ে যার। গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়ার তথ্যের বরাতে সিটিটিসি প্রধান বলেন, “ঘটনাস্থলে দুই জনকে পাহারায় রেখে বাকিদের সহায়তায় রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ইমন রেললাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। কাজ শেষে সিলিন্ডার দুটো ঘটনাস্থলে ফেলে বাকি সরঞ্জাম নিয়ে তারা গাড়িতে করে ঢাকায় চলে আসেন। “ওই মালামালগুলো নিয়ে ইমন তার বাসায় চলে যায়। ঘটনার দুইদিন পর ইমনকে চকবাজার এলাকায় ডেকে তাকে তিন হাজার টাকা দিয়ে আত্মগোপনে যেতে বলেন ইখতিয়ার। বাসায় মালামাল রেখে ইমন আত্মগোপনে যান।” এর আগে গাজীপুরের পুলিশ ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি গ্যাস সিলিন্ডারসহ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার দেখিয়েছিল। গত রোববার গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি বিদ্যুৎ চালিত গ্রাইন্ডিং মেশিন (হুইল কাটার), গ্যাসের পাইপ, গ্যাস কাটারের প্রেশার নিয়ন্ত্রণ মিটার এবং একটি করে ছেনি, ডালি রেঞ্জ ও স্লাই রেঞ্জ উদ্ধার দেখিয়েছে সিটিটিসি। যন্ত্রপাতিগুলো সব নতুন। ছেনির প্লাস্টিক র‌্যাপিংও খোলা হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আসাদুজ্জামান বলেন, “এই ১০ তারিখেই তারা এগুলো নবাবপুর মার্কেট থেকে কিনেছিল।” কয়েকদিন আগে থেকে ইখতিয়ার রহমান কবিরকে পাওয়া যাচ্ছিল না, তাকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে স্বজনদের বরাতে খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। এ কয়দিন তিনি পুলিশের হেফাজতে ছিলেন কি না- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, “আমরা তাকে গত রোববার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করেছি। আর এই ধরনের অপরাধীরা ঘটনা ঘটিয়ে তো এক জায়গায় থাকবে না। ঘটনার পর ইখতিয়ার ও ইমন অন্তত ১০টি অবস্থান পরিবর্তন করেন।” আসাদুজ্জামান বলেন, “এর আগে বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরের কথা জানতে পারি। গত ২৯ অক্টোবর ডেমরায় বাসে আগুন দিয়ে যে হেলপারকে হত্যা করা হয়, সে ঘটনাতেও তিনি জড়িত ছিলেন। সেই মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবির জানিয়েছেন, তিনি ঢাকার ডেমরা, যাত্রবাড়ী, নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বংশাল এলাকায় অন্তত আটটি বাসে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা। ”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ
https://slotbet.online/