নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিই। আমি খুব আনন্দিত। এ বিজয় আমার বিজয় নয়, এটি জনগণের বিজয়। আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের শুরুতে এসব কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, এবারের নির্বাচন ছিল ব্যতিক্রমী। সাধারণত দলগুলো প্রার্থী দেয়। এবার আমি প্রার্থী দেওয়ার পাশাপাশি সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিই। তিনি বলেন, একটি দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি, কারণ তারা কখনো অংশ নিতে চায় না। যারা মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে তৈরি হয়, তাদের জনসমর্থন থাকে না। নির্বাচনকে তারা ভয় পায়। আমাদের দল হলো জনগণের দল। তিনি আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্রও নির্বাচিত হয়েছে এবং অন্য দলগুলো থেকেও নির্বাচিত হয়েছে, দেশের মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এ বিজয় আমার বিজয় নয়, আমি মনে করি এটি জনগণের বিজয়। কারণ এখানে জনগণের যে অধিকারটা আছে, সরকার গঠন করার ক্ষমতা তাদের হাতে, যেটি আমার দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, জনগণের ভোটের অধিকার, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। গণভবনের সবুজ লনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের শতাধিক সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দেশের জন্য ও গণতন্ত্রের জন্য এটা যুগান্তকারী ঘটনা বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নির্বাচনটা যে অবাধ, সুষ্ঠু হতে পারে সেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি অনেকবারই নির্বাচন করেছি। সেই ১৯৮৬ সাল থেকে আট বারই আমার নির্বাচন করা হয়ে গেছে। তবে এত মানুষের আগ্রহ আগে দেখেনি। আমি মনে করি বাংলাদেশের জনগণ অনেক আনন্দিত এবং নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন, মতামত দিয়েছেন, সেটা উপযোগী। সেই জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দেশি সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনারা আমাদের দেশটাকে দেখতে এসেছেন। ২০১৪ ও ‘১৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের সবসময় এটাই চেষ্টা ছিল নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু করা। মানুষের যে ভোটের অধিকারটা, অর্থাৎ সে যাকে চায়, কে সরকারে থাকবে, সেটা মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। সেই জন্য নির্বাচনের সিস্টেমকে সংস্কার করেছি। এ সময় নির্বাচন কমিশন আইনসহ অন্যান্য বিধানবলী তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচন চলাকালে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে নির্বাচন কমিশনের অধীনস্ত করে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা, সেটাই লক্ষ্য ছিল। এবারের নির্বাচনটা আরেকটু ব্যতিক্রমী। সাধারণত আমরা দলকে প্রার্থী ঠিক করে দেই বা সব দল তাদের প্রার্থী নির্বাচন করে দেয়। এবার আমরা আমাদের প্রার্থী নির্বাচিত করেছি, পাশাপাশি এ নির্বাচনটা উন্মুক্ত করে দিয়েছি যে যার ইচ্ছেমতো দাঁড়াতে পারবে। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন একটি দল হয়তো অংশগ্রহণ করেনি। কারণ তারা কখনোই করতে চায় না। সে দলগুলো মিলিটারি ডিকটেটরের হাতে তৈরি হয়। ফলে তারা নিজেরা চলতে পারে না, নিজেদের জনসমর্থন থাকে না। সেই জন্য নির্বাচনকে ভয় পায়। আমাদের দল হলো জনগণের দল। এবারে নির্বাচনে জনগণ যে ভোট দিয়েছে, যাকে নির্বাচিত করেছে এবং আমাদের অনেক স্বতন্ত্রও নির্বাচিত হয়েছে। অন্যদলগুলোরও বেশকিছু নির্বাচিত হয়েছে। এই দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন এবং নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনের এই বিজয়কে ‘জনগণের বিজয়’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এ বিজয়টা আমার বিজয় না। আমি মনে করি জনগণের বিজয়। কারণ এখানে জনগণের যে অধিকার আছে, সরকার গঠন করবার ক্ষমতা আছে তাদের হাতে। যেটা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছি জনগণের ভোটের অধিকার সেটা তারা নিজেরা প্রয়োগ করবে, সেটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। নির্বাচন হয়ে গেছে, এখনও গেজেট হয়নি। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সম্পূর্ণ ফলাফল আসলে গেজেট হবে, তখনই শপথ হবে। এরপর আমাদের সংসদীয় দলের বৈঠক করতে হবে। সেখানে সংসদীয় দলের নেতা কে হবেন সেটা নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সেটা নির্বাচিত করবেন। মেজরিটি পার্টি যাকে নির্বাচিত করবেন তিনিই হবে সংসদীয় দলের নেতা। তখন সরকার গঠন করতে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে হবে, সরকার গঠন হবে। এটাই সংবিধানিক প্রক্রিয়া, তা অনুসরণ করতে চাচ্ছি। বিদেশি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচনটা যে অবাধ, সুষ্ঠু হতে পারে সেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পেরেছি। আপনাদের আগমন আমাদের দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকারটা আরও সুরক্ষিত হয়েছে।আপনারা যার যার দেশে ফিরে যাবেন, বাংলাদেশের কথা বলবেন। আপনাদের আগমণ আমাদের গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করবে, শক্তিশালী করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। গত রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ হয়। ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ভোট হয় ২৯৯টি আসনে। এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২৩টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ।
https://slotbet.online/